দর্শনশাস্ত্রে রঁনে ডেকার্তের সবচেয়ে বড় অবদান, দর্শনকে বিজ্ঞান ও যুক্তিনির্ভর করে তুলতে ইউরোপে তিনিই প্রয়াসী হয়েছিলেন সবার আগে। তার পদ্ধতি পরবর্তী দীর্ঘকাল ধরে বহুলাংশে অনুসৃত হয়েছে। আধুনিক দর্শনের জনক বলা হয় তাকে। দর্শনকে তিনি রচনা করেছেন গণিতের ছাঁচে, তার দর্শন গণিতায়িত। তার দার্শনিক পদ্ধতি প্রাচীন এরিস্টটলীয় দর্শনকে কোনো বিতর্কিত দৃষ্টিভঙ্গির উদগীরণ ছাড়াই পরিত্যাগ করে। তরুণ বয়সেই তার মনে ছিল একটি অনুসন্ধান, যার লক্ষ্য ছিল মানুষ এবং মহাবিশ্বের স্বরূপ জানা। সে জন্য দরকার ছিল অন্তর্দৃষ্টি। কিন্তু তখনকার ইউরোপীয় দর্শনে বিদ্যমান চিন্তা ও পদ্ধতি এ জন্য যথেষ্ট ছিল না। গভীর অধ্যয়নের মধ্য দিয়ে তিনি বুঝতে পারেন মধ্যযুগ থেকে ইউরোপে যে জ্ঞান প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে চলে এসেছে তা নির্ভরযোগ্য নয় তেমন। এ জন্যে দরকার ছিল দার্শনিক নতুন পদ্ধতি। তিনি সেই পদ্ধতির প্রস্তাব করেন সবলে। ডেকার্ত দেখান, দর্শন হচ্ছে একটি সামগ্রিক ভাবনাপদ্ধতি যা জ্ঞানকে মূর্ত করে। তার মতে, ‘দর্শন হচ্ছে একটি বৃক্ষের মতো যার মূল হচ্ছে আধ্যাত্মিকতা, কাণ্ড পদার্থবিজ্ঞান। বিজ্ঞানের অন্য সব শাখা এই কাণ্ড থেকে শাখা-প্রশাখা হিসেবে বের হয়। তাদেরকে আবার মূল তিনটি ভাগে বিভক্ত করা হয়। যথা- চিকিৎসাশাস্ত্র, বলবিজ্ঞান ও নীতিশাস্ত্র।’