তৃতীয় খলিফা হজরত ওসমান রা:-এর যুগে বেশকিছু যুগান্তকারী কাজ হয়েছে। তারমধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, পবিত্র কুরআনের একই পঠনরীতিতে উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ করা। প্রথম খলিফা হজরত আবু বকর রা: কর্তৃক কুরআন সুবিন্যস্ত ও একই মলাটে নিয়ে আসার পরও হজরত ওসমানকে যে বিষয়টি পুনরায় কুরআন সংকলনে বাধ্য করেছে তা হল, আবু বকর রা:-এর সংকলিত কুরআনের পাশাপাশি সেসময়ে আরও কয়েকজন সাহাবি ‘কিরাতে সাবআ’ তথা কুরআন তিলাওয়াতের সাত পঠনরীতির অনুকরণে একাধিক প্রতিলিপি তৈরি করেন। পরে দেখা যায়, বিভিন্ন শহরে কুরআন তিলাওয়াতের ‘কোন্ পাঠরীতি’ সঠিক-এ নিয়ে শহরবাসীর মধ্যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়-এমনকি বিরোধী পক্ষকে কাফের পর্যন্ত আখ্যায়িত করা হলে হজরত ওসমান রা: আশু ফেতনা ও বিশৃঙ্খলা রোধেই মূলত ফের কুরআন সংকলনের অভাব অনুভব করেন। সে লক্ষ্যেই তিনি অভিন্ন পঠনরীতিতে কুরআন লিপিবদ্ধ করেন এবং ওই প্রতিলিপিগুলো বিভিন্ন শহরে পাঠিয়ে দেন। কেননা, মহাগ্রন্থ আল কুরআন নিছক কোন পঠিত কিতাব নয়; বরং এটি ইসলামি শরিয়তের সংবিধান। ইবাদত, মুয়ামালাত-মুয়াশারাত, সমাজ-সংস্কৃতি, রাজনীতি এবং আখলাক-চরিত্র-প্রতিটি বিষয়ের সঠিক নির্দেশনা কুরআনে বিদ্যমান। সুতরাং এটির পঠনরীতিতেই যদি মতানৈক্য তৈরি হয় তাহলে কুরআন নাজিলের প্রধান উদ্দেশ্য সমূহ আড়াল হয়ে যাবে।