Breaking News >> News >> Daily Nayadiganta


উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে শক্তিশালী করা প্রয়োজন


Link [2022-04-06 22:55:36]



সবচেয়ে বেশি যেখান থেকে সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্যসেবা নিতে পারে সেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কার্যকর নয়। সরকারের এই স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানটিতে চিকিৎসক উপস্থিতির অভাবে অত্যাবশ্যক স্বাস্থ্যসেবাটিও পাওয়া যায় না। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেই প্রয়োজনীয় জনবল, চিকিৎসক নিয়োগ দিলেও তাদের সবাইকে কর্মস্থলে পাওয়া যায় না। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সুযোগ খুবই সীমিত। কোনো কোনো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে খুব সাধারণ মানের এক্সরেও হয় না। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নিচে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের আরো বেহাল অবস্থা। ইউনিয়ন কেন্দ্রেও ডাক্তার নিয়োগ দেয়া থাকলেও সেখানে তাদের পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। বাংলাদেশ সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে সবার জন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে অঙ্গীকারাবদ্ধ। এমনই পরিস্থিতিতে আজ বাংলাদেশে পালন হচ্ছে ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস’। বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসে এবারের প্রতিপাদ্য ‘আমাদের পৃথিবী আমাদের স্বাস্থ্য’। গত দুই বছরে বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবীই করোনা মহামারীতে ভুগেছে। বাংলাদেশে শুরুতে খুবই আতঙ্কজনক পরিবেশ থাকলেও পরে অনেকটা সামলে নিয়েছে। ২০২১ থেকে চলে আসা টিকাকরণ কর্মসূচি সাফল্যের সাথে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রথম দিকে মনে করা হয়েছিল, দরিদ্র দেশ বলে বাংলাদেশ সময় মতো প্রয়োজনীয় টিকা পাবে না। কিন্তু বিশ্বব্যাপী টিকা উৎপাদন ও সরবরাহ সন্তোষজনক হওয়ায় বাংলাদেশও টিকা পেয়েছে। উন্নত দেশের নাগরকিদের ইতোমধ্যে টিকার তৃতীয় ডোজ দেয়া হয়ে গেছে। ফলে তাদের উৎপাদিত বাড়তি টিকা অন্যান্য দেশে পাঠাচ্ছে। এসব কারণে বাংলাদেশে টিকাকরণ সফলতার সাথে এগিয়ে চলেছে। ঠিক এ কারণেই খাগড়াছড়ির মতো জেলায় ৭০ শতাংশ টিকাকরণ হয়েছে (প্রথম ডোজ)। তবে মহামারী থেকে শিক্ষালাভ করার দরকার ছিল বাংলাদেশের। তা থেকে কোনো লাভ ঘরে তুলে আনতে পারেনি বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ। তিনি বলেন, এ ধরনের আরেকটি মহামারী দেখা দিলে তা দূরীকরণে পদক্ষেপ নেয়ার যে প্রচেষ্টা অর্জন করার দরকার ছিল বাংলাদেশের, কিন্তু তা পারেনি। তিনি বলেন, সরকারের উচিত ছিল করোনা মহামারীর যে শিক্ষা তার আলোকে একটি টাস্কফোর্স গঠন করে তা বাস্তবায়নে একটি রোডম্যাপ তৈরি করা। এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, এমনিতেই দেশের ২০ শতাংশ মানুষ সঠিক চিকিৎসা বঞ্চিত। করোনা মহামারীতে আরো ২৪ শতাংশ মানুষ দরিদ্র হয়েছে, তারা চিকিৎসা বঞ্চিত। দেশে সবার জন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে টাঙ্গাইলে ২০১৫ থেকে একটি পরীক্ষামূলক প্রকল্প কাজ করছে। সরকারের উচিত ছিল একই সাথে দেশের আরো কয়েকটি জেলায় স্বাস্থ্য সুরক্ষার কর্মসূচিটি বাস্তবায়ন করা। ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ জানিয়েছেন, সবার জন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবাকে গুরুত্ব দিতে হবে। বর্তমান অকার্যকর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে কার্যকর করতে হবে। একটি যুগোপযোগী অর্গানোগ্রাম তৈরি করে এর জনশক্তি বাড়াতে হবে, পরীক্ষার সব ধরনের সুবিধা থাকতে হবে, পূরণ করতে হবে ওষুধের ঘাটতি। বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রয়োজনের ২৫ শতাংশ ওষুধ কিনতে পারে। ওষুধের ঘাটতি পূরণের জন্য তা ৫০ শতাংশে উন্নীত করতে হবে। সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হলে কমিউনিটি ক্লিনিকে এমবিবিএস নিয়োগ দিতে না পারলেও প্যারামেডিক নিয়োগ দিতে হবে।



Most Read

2024-09-19 23:31:05