Breaking News >> News >> Daily Nayadiganta


বৃদ্ধ বাবাকে রাস্তায় ফেলে গেল ছেলে


Link [2022-03-16 02:55:32]



ডিজিটাল সভ্যতার দেশে আজ যেন মানবতা হারিয়ে যাচ্ছে। মনুষ্যত্ববোধ এতটাই নিচে নেমে গেছে যে সন্তান হয়েও বাবাকে রাস্তায় ফেলে যেতে মায়া দেখাচ্ছে না। গত ১০ মার্চ নিজ জন্মদাতা এক অসহায় অসুস্থ বাবাকে রাস্তায় ফেলে রেখে গেছে তার একমাত্র সন্তান। ওই বৃদ্ধ আব্দুল মন্নান হাওলাদারের (৭০) অসহায়ত্বের চিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসজুকে উঠে এলে উপজেলাজুড়ে মানুষের মধ্যে মায়া ও মমতাবোধ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ভুক্তভোগী আব্দুল মন্নান হাওলাদার কেঁদে কেঁদে বলেন, তার বাড়ি ভান্ডারিয়া উপজেলার পার্শ্ববর্তী ঝালকাঠী জেলার রাজাপুর উপজেলার গালুয়া ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত হাফেজ উদ্দিন হাওলাদারের ছেলে। গত তিন বছর ধরে তিনি স্ট্রোকজনিত রোগে আক্রান্ত এবং গত দুই সপ্তাহ ধরে অসুস্থতা একটু বেড়ে যাওয়ায় বিছানাতেই থাকতে হয় তাকে। কিন্তু গত ১০ মার্চ সন্ধ্যায় ছেলে ইলিয়াস হাওলাদার (৩০) বাবাকে চিকিৎসা দেয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের করে আনে। এরপর পাষণ্ড ছেলে বাবা আব্দুল মন্নানকে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার পৌর শহরের রিজার্ভ পুকুরপাড় এলাকায় রাস্তার পাশে পরিত্যক্ত জায়গায় ফেলে রেখে চলে যায়। চলে যাবার সময় ছেলে বাবাকে বলে, ‘বাবা তুমি এখানে এক রাত থাকো, কাল এসে তোমাকে নিয়ে যাবো এবং চিকিৎসা করাব। বাবা ছেলের কথায় বিশ্বাস করে সেখানেই শুয়ে থাকে। রাতের পর রাত যায় কিন্তু ছেলের কোনো দেখা নেই। আব্দুল মন্নান আরো জানান, দুই ছেলেমেয়ে স্ত্রী নিয়ে তার সংসার ভালোই চলত। মেয়েকে বিয়ে দেয়ার পর তার শরীরে বাসা বাঁধে নানান ব্যাধি। সংসারে নেমে আসে চরম অভাব অনটন। এ কারণে গত তিন বছর আগে ছেলে রেখে স্ত্রী বকুল বেগম তার বাবার বাড়ি চলে যায়। অসহায় মন্নান বলেন, আমার বাড়িঘর জমি আছে। কিন্তু আজ আমি বড় অসহায়, হাঁটতে পারি না। এখানে পড়ে থাকলে আমি ধুঁকে ধুঁকে মরে যাবো। আমি বাড়ি থাকলে ছেলের কষ্ট হয় এবং সম্মান নষ্ট হয় তাই তাকে রাস্তায় ফেলে গেছে। তিনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসার জন্য আকুতি জানান। স্থানীয়রা জানান, বিষয়টা খুবই দুঃখজনক, একটা ছেলে বাবাকে রাতের আঁধারে পরিত্যক্ত জায়গায় ফেলে যেতে পারে এটা কল্পনাও করা যায় না। ওই বৃদ্ধকে গভীর রাতে একা পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা ও পথচারীরা খাবার দিয়ে যাচ্ছেন। স্থানীয়রা অসহায় বদ্ধকে সহযোগিতার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করেন।



Most Read

2024-09-20 11:38:33