পরীক্ষার ফল বেরিয়েছে। বাবাও শুনেছেন সে ফল। লেখাপড়ার মান নির্ধারণে বাবার কাছে একটি মাত্র স্কেল, ‘প্রথম হওয়া’। বাবার স্কেলের মধ্যে প্রথম হওয়া ছাড়া আর কারো লেখাপড়াকে লেখাপড়া হিসেবে গণ্য করতেন না যা হাইস্কুল জীবন পর্যন্ত সংরক্ষিত (ক্লাসে প্রথম) ছিল। এসএসসিতে সংরক্ষিত রয়নি। আমার রেজাল্ট দ্বিতীয় শ্রেণী। এই অধঃপাতের জন্য দায়ী সালমার পরিবার। সব মায়াবিনীর ছলাকলা। পুরনো প্রতিশোধ নিতে পুঁচকে মেয়েটা লেলিয়ে দিয়েছে আমার সহজ-সরল ছেলেটার পেছনে। বাবার ভাষায়, ‘লেখাপড়া যা হয়েছে তা দিয়েই চলবে।’ পড়ালেখার শুরুতেই বাবার সাথে কথা ছিল; যে দিন দ্বিতীয় হবো; সে দিন বন্ধ করে দেবেন আমার লেখাপড়া। পূর্বশর্ত অনুসারেই আমার লেখাপড়া বন্ধ ঘোষণা করলেন বাবা। ওনার সামনে যাওয়ার সাহস ছিল না। কারো মাধ্যমে কলেজে ভর্তির বিষয়ে তাকে অনুরোধ করালে বাবা বলতেন, আমার যতটুকু সাধ্য ছিল ততটুকু লেখাপড়া করিয়েছি। পোলা এখন ডাঙর হয়েছে, এবার সংসারের দায়িত্ব থেকে মুক্তি চাই। ঠিক করেছি, গরু-বাছুর সব বিক্রি করে দেবো। আমি না থাকলে এগুলো কষ্ট পাবে। অবলা প্রণীদের কষ্ট আমার সহ্য হবে না। সব বিক্রি করে চিল্লায় চলে যাবো।