Breaking News >> News >> Daily Nayadiganta


আছেন সাবেক বিচারপতি, উচ্চপদস্থ সেনাকর্মকর্তা, আমলা ও বুদ্ধিজীবী


Link [2022-02-11 22:32:05]



নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে রাষ্ট্রপতির সংলাপ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ ও বর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। সংলাপের মধ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন আইন ও সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে। যদিও সার্চ কমিটি গঠন নিয়ে সরকারবিরোধী জোটের শুরু থেকেই অনীহা রয়েছে। গঠিত সার্চ কমিটি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছে নামের তালিকা চেয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের পছন্দমতো ব্যক্তিদের নামের তালিকা সার্চ কমিটির কাছে জমা দিচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে গতকাল সার্চ কমিটির কাছে পছন্দসই ব্যক্তিদের নামের একটি তালিকা জমা দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সার্চ কমিটি থেকে ১০ জনের নাম চাওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ১০ জনের নামই প্রস্তাব করা হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর বৈঠকে নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটির রাজনৈতিক দলের কাছে নাম প্রস্তাবের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। তখন দলীয় প্রধান সার্চ কমিটিতে নাম জমা দেয়ার জন্য সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যদের নাম প্রস্তাব করতে এবং তা চূড়ান্ত করতে বলেন। তখন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যরা লিখিতভাবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাদের প্রস্তাবিত নাম জমা দেন এবং চূড়ান্ত তালিকা করার জন্য দলের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে দায়িত্ব দেন। ওই তালিকা থেকে যাচাই বাছাই করে এবং সরকারি- বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা থেকে তথ্য সংগ্রহ করে প্রধানমন্ত্রী তালিকা চূড়ান্ত করেন। যদিও সার্চ কমিটির কাছে জমা দেয়া তালিকা সরকারি দল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেননি। তালিকা জমা দেয়ার বিষয়ে দলটির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ বলেন, আমরা কেবল বার্তাবাহক হিসেবে দলের পক্ষে সিলগালা করা একটা কাগজ জমা দিয়েছি। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এবং সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যদের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে নামের তালিকা করা হয়েছে। কাদের নাম আছে, তা আমাদের জানা নেই। সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী ঘরানার অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, অবসরপ্রাপ্ত উচ্চপদস্থ সেনাকর্মকর্তা, সাবেক আমলা এবং সরকার সমর্থিত বুদ্ধিজীবীদের সমন্বয়ে ওই তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। সরকারি দল মনে করছে, আগে নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য রাষ্ট্রপতির সংলাপের মাধ্যমে সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে। আর এবারই প্রথম নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। ওই আইনের আলোকে গঠিত সার্চ কমিটি নিরপেক্ষ ও যোগ্য ব্যক্তিদের দিয়ে গঠন করা হয়েছে। এবার যে ইসি গঠন হবে তাদের অধীনেই আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর ওই সার্চ কমিটি একটি সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেয়ার জন্য সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করবে বলে ক্ষমতাসীনরা বিশ্বাস করেন। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য লে. কর্নেল (অব:) মুহাম্মদ ফারুক খান সম্প্রতি নয়া দিগন্তকে বলেন, অতীতে সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে ২-৩টি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই নির্বাচন মোটামুটি সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে। আমি মনে করি, বর্তমান প্রেক্ষাপটে নির্বাচন কমিশন গঠনে যোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি একটি ভালো ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন উপহার দেবে বলে আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য সাংবিধানিক বিধান ও আইনের যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই সার্চ কমিটি গঠিত হয়েছে। আইন অনুযায়ী সাংবিধানিক দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি ও দেশপ্রেমিক বিশিষ্টজনদের সমন্বয়ে যে সার্চ কমিটি গঠিত হয়েছে, এই সার্চ কমিটির প্রতি জনগণের পূর্ণ আস্থা ও বিশ^াস রয়েছে। ইতোমধ্যে সার্চ কমিটি একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনে নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলকে তাদের প্রস্তাবনা উপস্থাপনের আহ্বান জানিয়েছেন এবং সবার মতামতের ভিত্তিতে একটি গ্রহণযোগ্য ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রত্যয় দৃপ্ত অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। জনগণ প্রত্যাশা করে, একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনের যে শপথ নিয়ে সার্চ কমিটির কার্যক্রম শুরু হয়েছে- তা পরিপূর্ণ রূপে বাস্তবায়িত হবে।উল্লেখ্য, নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের লক্ষ্যে গত ২০ ডিসেম্বর থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপ শুরু করেন রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ। এর আগে নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ওই সংলাপের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি ‘সার্চ কমিটি’র সুপারিশের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠন করেন। বর্তমান ইসির পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ১৪ ফেব্রুয়ারি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে সার্চ কমিটির মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন। ওই নির্বাচন কমিশনের অধীনে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।



Most Read

2024-09-20 20:39:59