Breaking News >> News >> Daily Nayadiganta


অগ্রাধিকার উপেক্ষার বিপদ


Link [2022-02-02 18:31:19]



মেগা প্রকল্প গ্রহণে অগ্রাধিকারের বিষয়টি গুরুত্ব না পাওয়া ও স্থান নির্বাচনে আঞ্চলিকতাকে প্রাধান্য দেওয়ায় শতাব্দীর প্রাচীনতম নৌরুট নগরবাড়ী-আরিচা-দৌলতদিয়া ভূগোলের পাতা থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে। এর মধ্যে রাজনৈতিক ঈর্ষাপরায়ণতার বিষয়টিও জড়িত। গণআন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত জেনারেল এরশাদ রংপুর যাওয়ার পথে ফেরি বিভ্রাটে পড়ে দীর্ঘসময় আরিচা ঘাটে আটকা পড়েছিলেন। তার ক্ষমতা দখলের পর থেকে আরিচা ঘাটের ভাগ্য বিপর্যয় শুরু হয়। যা এখনও চলছে। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিসভার প্রভাবশালী সদস্য ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপটেন (অব:) আব্দুল হালিম চৌধুরী। শিবালয় হরিরামপুর নিয়ে গঠিত মানিকগঞ্জ-২ আসন ছিল তার নির্বাচনী এলাকা। ১৯৫৪ সাল থেকে মানিকগঞ্জ-২ আসনটি সিলেট-১ আসনের মতো মর্যাদাবান আসন বলে বিবেচিত হতো। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে শেরেবাংলার কৃষক শ্রমিক পার্টির সদস্য হিসেবে যুক্তফ্রন্টের মনোনয়ন পেয়ে এমপি হয়েছিলেন মরহুম আব্দুল লতিফ বিশ্বাস যিনি সাবেক মন্ত্রী মরহুম এম কে আনোয়ারের শ্বশুর ছিলেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মরহুম হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মন্ত্রিসভায় তিনি খাদ্য ও কৃষিমন্ত্রী ছিলেন। মানিকগঞ্জ সদর আসনে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে নির্বাচিত এমএনএ মরহুম মোসলেমউদ্দিন খান হাবু মিয়া ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-২ আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভায় পাট প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। জেনারেল এরশাদের শাসনামলে উপনির্বাচনে এই আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে বিচারপতি এ কে এম নুরুল ইসলাম প্রথমে আইনমন্ত্রী পরে উপরাষ্ট্রপতি হন। বেগম খালেদা জিয়ার আমলে এই আসন থেকে তিনবার নির্বাচিত এমপি মরহুম হারুন অর রশীদ খান মুন্নু মিয়া দফতরবিহীন মন্ত্রী হন। অথচ অবৈধ ফখরউদ্দীন-মইনউদ্দিন সরকারের নিয়োগকৃত ড. এ টি এম শামসুল হুদার নির্বাচন কমিশন ২০০৮ সালে গ্রামের জনগণকে বঞ্চিত করে পল্লী অঞ্চলের যে ১০টি আসন বিলুপ্ত করে ঢাকাকে সাতটি, চট্টগ্রামকে দুটি ও গাজীপুরকে একটি আসন উপহার দিয়েছিলেন তার মধ্যে মানিকগঞ্জ-২ আসনটিও ছিল। মানিকগঞ্জ-২ আসনটি বিলুপ্ত করে শিবালয় উপজেলাকে মানিকগঞ্জ-১ আসনের ঘিওর-দৌলতপুরের সাথে সংযুক্ত করা হয়েছে এবং হরিরামপুরকে মানিকগঞ্জ-৩ সিঙ্গাইরের সাথে সংযুক্ত করায় আসনটি পাটুরিয়া ঘাটের তিন কিলোমিটার ভাটি থেকে শুরু হয়ে ঢাকার কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত এসে ঠেকেছে। ফলে শিবালয় ও হরিরামপুর উপজেলা থেকে গত তিনটি নির্বাচনে কেউ জয়ী হতে পারেননি। রাষ্ট্রপতি জিয়া ১৯৭৮ সালে খাল খননের মাধ্যমে সেচ দিয়ে খাদ্যশস্য উৎপাদনের যে যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন তার শুভ উদ্বোধন হয়েছিল আরিচাঘাট থেকে। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশের খাদসমূহ সংস্কার করে খালে রূপান্তর ঘটিয়ে আরিচাঘাটে ১৫-২০টি শক্তিশালী পাম্পের সাহায্যে যমুনা নদী থেকে পানি উত্তোলন করে খালে প্রবাহিত করার ব্যবস্থা করেছিলেন। আরিচার ২ কিলোমিটার ভাটিতে কাসাদহ খাল পুনঃখনন করে একইভাবে পাম্পের সাহায্যে পানি উত্তোলন করে কয়েক হাজার একর জমিতে সেচের মাধ্যমে উচ্চফলনশীল ইরিধান চাষের ব্যবস্থা করে তিনি হাজার হাজার কৃষকের মুখে হাসি ফুটিয়েছিলেন। এরশাদ ক্ষমতা দখলের পর পাম্পের মুখে নদী ড্রেজিং করে পানিপ্রবাহ চালু না রাখায় তা বন্ধ হয়ে গেছে।



Most Read

2024-09-21 00:42:11