Breaking News >> News >> Daily Nayadiganta


বাংলা সাহিত্যে অন্ধকার যুগ : মিথ বনাম বাস্তবতা


Link [2022-01-24 18:58:24]



(ষষ্ঠ কিস্তি) বাংলায় মুসলিম অভ্যুত্থানের আগে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অস্তিত্ব স্পষ্ট ছিল, বলা যায় না। শিক্ষিত ও উচ্চকোটির লোকেরা চর্চা করতেন সংস্কৃত ভাষা। গ্রামের চাষা ও অন্ত্যজ মানুষের মুখের ভাষা ছিল বাংলা। তার উদ্ভব হয়েছিল প্রাকৃতের যে রূপান্তর থেকে, তাকে সংস্কৃতগর্বীরা তাচ্ছিল্য করে বলত অপভ্রংশ বা মূর্খ ও সংস্কৃতিহীন মানুষের ভাষা। যার কোনো লেখ্য ও সভ্যরূপ থাকতে পারে না। বাংলা তখনো লেখ্য অবয়বে বিকশিত হয়নি। তখনকার বাস্তবতায় বাংলাভাষীদের না ছিল কোনো সামাজিক প্রতিপত্তি, না ছিল সাংস্কৃতিক গুরুত্ব। তাদের ভাষা ও সংস্কৃতি ছিল অবহেলিত ও অবজ্ঞাত। এর অস্তিত্বকে স্বীকার করা হতো বড়জোর ভাষায়ং মানবং বা লোকভাষা বলে। ব্রাক্ষণ্যবাদের চোখে এই মানুষেরা হয় ধর্মরহিত বৌদ্ধ, নয় নিম্নশ্রেণীর, অচ্ছুৎ। সংস্কৃত তখন ছিল ধর্মের ভাষা, সংস্কৃতিরও ভাষা। ব্রাহ্মণরা বেদের ভাষা অর্থাৎ সংস্কৃত ছাড়া অন্য কোনো ভাষায় ধর্মীয় গ্রন্থ রচনাকে ধর্মদ্রোহিতার শামিল বিবেচনা করত। ধর্মগ্রন্থগুলো ছিল শূদ্রদের ধরাছোঁয়ার বাইরে। হিন্দু আমলে দরবারের ভাষাও ছিল সংস্কৃত। ফলে শাসক ও শিক্ষিত লোকের আগ্রহ ছিল শুধুই সংস্কৃত ভাষার প্রতি। পাল যুগে বাংলাভাষী ব্রাত্য মানুষ তান্ত্রিক বৌদ্ধসাহিত্যের যে ধারার সূচনা করেন, হিন্দু শাসনামলে তার প্রসার কমে যায়। তা নিন্দিত হয়, বিতাড়িত হয় এবং উচ্ছেদের শিকার হয়। ফলে বিলুপ্তির আশঙ্কা বাংলা ভাষার মাথার ওপর ঝুলছিল।



Most Read

2024-09-21 05:54:49